শুধু একটা ছোট্ট ম্যাজিক ওয়ার্ড: শ্যাজাম!

কেবল ছোট্ট একটা শব্দ উচ্চারণ করার পরেই আচমকা অতিমানবিক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে পড়ে ১৪ বছরের এক কিশোর।

কেবল ছোট্ট একটা শব্দ উচ্চারণ করার পরেই আচমকা অতিমানবীয় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে পড়ে ১৪ বছরের এক অনাথ কিশোর। এই ক্ষমতার দায়ভার কি সে আদৌ একা বহন করতে পারবে?

নিয়মিতভাবেই সুপারহিরো এবং অ্যান্টিহিরোধর্মী মুভির ভিড়ে এই যুগে ভিন্ন কিছু উপহার দেয়া কঠিন। এদিকে চোখধাঁধানো সিজিআই, অ্যাকশন সিকোয়েন্স কিংবা কাহিনীর পরতে পরতে টুইস্টের ভিড়ে অনেক কমিক মুভির কাহিনীই যেন প্রাণ হারিয়ে ফেলে। এসবে তেমন একটা গুরুত্ব না দিয়ে ‘শ্যাজাম!’ সবাইকে চমক দিলো মূলত ইমোশন এবং হিউমারকে পুঁজি করে। সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল ক্রিস্টোফার রিভের সুপারম্যানের যুগে, যেসময় কমিক বই মুভি ছিল সোজাসাপ্টা বিনোদনের মাধ্যম। মুভিটি দেখতে গেলে কোনো অরিজিন স্টোরি জানতে হবে না, অন্য কোনো মুভিও দেখা লাগবে না, নির্দ্বিধায় যেকারো সাথে যেকোনো সময়ে উপভোগ করা যাবে একে।

শ্যাজাম! মুভির পোস্টার; © 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

ফিলাডেলফিয়ার এক সাধারণ কিশোর বিলি ব্যাটসন। শান্ত বিষণ্ণ চেহারা দেখে তার মনের মধ্যে কী চলছে, তা বোঝার উপায় নেই বিন্দুমাত্র। সেই সুযোগে প্রায়ই দুষ্টু বুদ্ধিকে কাজে লাগায় সে। তবে তার শৈশবের কাহিনী খুবই করুণ। নিতান্তই শিশু অবস্থায় মায়ের কাছ থেকে সে আলাদা হয়ে পড়ে দুর্ভাগ্যবশত, তারপর থেকে সে নিরন্তরই ছুটছে মায়ের খোঁজে।

এদিকে পৃথিবীর বাইরে ভয়াল এক জাদুকরী ডাইমেনশন হলো রক অফ এটারনিটি। সেখানে আছেন প্রাচীন জাদুকর শ্যাজাম, বহুদিন ধরে হন্যে হয়ে খুঁজে চলেছেন তার উত্তরাধিকারী, পরবর্তী চ্যাম্পিয়নকে। নরকের শয়তানরূপী সেভেন ডেডলি সিনকে তিনি বদ্ধ করে রেখেছেন সাতটি কুৎসিত মূর্তির আড়ালে। বহুযুগ চেষ্টা করেও এই ঐশ্বরিক ক্ষমতা দেবার মতো নির্ভরযোগ্য কাউকে পাননি তিনি।

এ বাড়ি ও’বাড়ি ঘুরে অবশেষে পারফেক্ট ফ্যামিলির দেখা পায় বিলি। হাসিখুশি ভিক্টর আর রোজা ভ্যাসকোয়েজ তাকে আপন করে নেন মুহূর্তেই। দত্তক পরিবারের আন্তরিকতার মাঝে এসেও বিলির বুক ফাঁকা ফাঁকা লাগে। ছোট্ট মিষ্টি ডারলা যখন তাকে ভাই বলে ডাকে, কিংবা কমিক বইপ্রেমী ফ্রেডি যখন তার সাথে সুপারহিরো নিয়ে কথা বলতে আসে, তার কাছে একে আদররূপী অত্যাচার বলে মনে হয়।

জাদুকর শ্যাজামের মুখোমুখি বিলি ব্যাটসন; © 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

এর মধ্যে হঠাৎ করেই জাদুকর শ্যাজাম বিলিকে দিয়ে দেন অলিম্পিয়ান দেবতাদের মিলিত এক ঐশ্বরিক শক্তি। শ্যাজামের নাম মূলত ছয় অবিনশ্বর দেবতার নামের প্রথম অক্ষর থেকে এসেছে। তার মধ্যে রয়েছে সলোমনের (S) প্রজ্ঞা, হারকিউলিসের (H) শক্তি, অ্যাটলাসের (A) সহিষ্ণুতা, জিউসের (Z) ক্ষমতা, অ্যাকিলিসের (A) শৌর্য ও মার্কারির (M) গতি। আর কোনো উপায় না পেয়ে অগত্যা তার দত্তক ভাই ওরফে বেস্ট ফ্রেন্ড, সুপারহিরো বিশেষজ্ঞ ফ্রেডি ফ্রিম্যানের দ্বারস্থ হয় বিলি। খুশিমনেই বিলি তথা ‘ক্যাপ্টেন স্পার্কলফিঙ্গার’ এর মেন্টর হবার দায়িত্ব নেয় ফ্রেডি। তাদের দুজনের ডাইনামিক ড্যুও পুরো মুভিজুড়েই দারুণ বিনোদন জুগিয়েছে। বিলি ব্যাটসন আর ফ্রেডি ফ্রিম্যানের নামের শেষ অংশ যোগ করে ডিসির সবচেয়ে জনপ্রিয় হিরোর নাম পেয়ে যাওয়াটা নিশ্চয়ই কাকতালীয় কোনো ঘটনা নয়!

এরকম সুপারপাওয়ার পাবার সাথে সাথেই আসে দায়িত্ববোধ, কিন্তু এটা তো ডিসি ইউনিভার্স। তাই দায়িত্বের থোড়াই কেয়ার করে নিজের খুশিমতো চলতে থাকে বিলি। তবে অচিরেই বড় এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় সে।

শ্যাজাম! © 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

ডিসি ইউনিভার্সের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সুপারহিরোর একজন হওয়া সত্ত্বেও শ্যাজামকে নিয়ে সাড়া ফেলার মতো খুব বেশি কাহিনী উঠে আসেনি। তবে প্রথমবার বড় পর্দায় এসেই দর্শক-সমালোচক সবার মন জয় করে নিয়েছে এই সুপারহিরো। এখন পর্যন্ত মুভিটির আয় ১৬৩ মিলিয়ন ডলার।

কিছুটা হরর এবং অ্যাডভেঞ্চারের ছোঁয়া থাকায় ‘দ্য গুনিজ’, ‘স্ট্যান্ড বাই মি’ কিংবা হালের জনপ্রিয় সিরিজ ‘স্ট্রেঞ্জার থিংস’ এর কথা মনে করিয়ে দিতে পারে শ্যাজাম!। তবে মুভিকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে বিলির দত্তক পরিবার। স্বল্প সময়ের মাঝেই দর্শকের মন ছুঁয়ে নিয়েছে এই ডাইভার্স কাস্ট। মা-বাবার সাথে সাথে গোমড়ামুখো পেদ্রো, ভিডিও গেমপাগল ইউজিন কিংবা পিচ্চি ডারলা, সবাই ছিল বিলির পাশে। তাই সুপার স্ট্রেংথ, হাইপারস্পিড কিংবা বুলেট ইমিউনিটি নয়, ফ্যামিলি বন্ডিংই হলো শ্যাজামের আসল সুপারপাওয়ার।

হিরোর পাশাপাশি ভিলেনের ব্যাকস্টোরিও সমানভাবেই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও খুব বেশি খোলাসা করা হয়নি, তারপরেও ডক্টর সিভানার প্রতিশোধস্পৃহার পেছনের কাহিনীটাও চমৎকারভাবে বিলির সাথে মিলে গেছে। একটি আন্তরিক পরিবারের ভূমিকা যে আসলে কতটা সুদূরপ্রসারী, কমিক মুভির ফ্যান্টাসিকে ছাপিয়ে সেটাই বড় হয়ে উঠেছে।

ডক্টর সিভানার ভূমিকায় মার্ক স্ট্রং; © 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

বিলি ব্যাটসনের ভূমিকায় অ্যাশার অ্যাঞ্জেলসহ অন্যান্য সব চরিত্রগুলোর ক্যাস্টিংই যথাযথ ছিল। এর আগে ডিসির দুই প্রজেক্ট ‘ব্যাটম্যান অ্যান্ড রবিন’ আর ‘স্মলভিল’ সিরিজে লিওনেল লুথার, জন গ্লোভার ছিলেন ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে। ‘কিংসম্যান’, কিকঅ্যাস’ এবং ডিসির আরেক প্রজেক্ট ‘গ্রিন ল্যান্টার্ন’ এ ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয় করা মার্ক স্ট্রং ভালোভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন ডক্টর সিভানাকে। আর শ্যাজামের ভূমিকায় জ্যাকারি লেভাই প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছেন বলা যায়। এর আগে অ্যাকশন কমেডি সিরিজ ‘চাক’ আর ‘ট্যাঙ্গলড’ এর ফ্লিন রাইডারের কণ্ঠ দেয়া ছাড়া মূল চরিত্রে খুব বেশি অভিনয় করতে দেখা যায়নি তাকে। তবে নিজের কমেডিক প্রতিভাকে খুব ভালোমতোই দখলে রেখেছেন তিনি। সবচেয়ে বড় কথা, একবারের জন্যও তাকে ১৪ বছরের এক কিশোর সুপারহিরো বাদে অন্যকিছু মনে হয়নি।

শ্যাজাম এবং তার মেন্টর; © 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

ফ্রেডি ফ্রিম্যানের ভূমিকায় ‘ইট (২০১৭)’ খ্যাত জ্যাক ডিলান গ্রেজারের অভিনয় ছিল মুভির হাইপয়েন্ট। প্রতিটা দৃশ্যেই সিন-স্টিলার পারফরম্যান্স দিয়েছেন এই কিশোর অভিনেতা। মুভিতে দেখানো হয়নি বটে, তবে ফ্রেডিরও আছে একটা ট্র্যাজিক ব্যাকস্টোরি। বাবা-মাকে হারানো, কিছুটা খুঁড়িয়ে চলা, পদে পদে বুলিংয়ের শিকার হওয়া এক কিশোর সে। তবে নিজের রূঢ় জীবনের হতাশাকে একজন চ্যাম্পিয়নের মতোই সে কাটিয়ে ফেলে তার সুপারহিরো অবসেশন দিয়ে। দত্তক বাবা ভিক্টরের মতে, বিলির সাথে পরিচয় হবার আগে কখনো কোনো নিয়ম ভাঙেনি ফ্রেডি। শুধু তা-ই না, পুরোটা সময়েই বিলির চাইতে বেশি পরিপক্বতার পরিচয় দিয়েছে ফ্রেডি। তাহলে তাকে কেন শ্যাজাম বেছে নিলেন না, এ প্রশ্ন আসতেই পারে।

আরেকটা প্রশ্ন আসতে পারে অনেকের মনে, বিলি ব্যাটসন যদি বড় হয়, তবে কি সে দেখতে আসলেই তার সুপারহিরো সত্ত্বার মতো হবে? নাকি একজন সাদাসিধে তরুণের মতোই হবে দেখতে?

কেবল নির্দোষ বিনোদনের ওপর ভিত্তি করে একটা ফিল গুড মুভি উপহার দেয়াই ছিল কাহিনীকার হেনরি গেডেনের মূল লক্ষ্য, আর সেক্ষেত্রে শতভাগই সফল তিনি। পরিচালক ডেভিড স্যান্ডবার্গের কথাও না বললেই নয়। ‘লাইটস আউট’, ‘অ্যানাবেল: ক্রিয়েশন’ এর মতো হরর মুভি ছিল তার রেজিউমে। মুভির হররকেন্দ্রিক অংশ ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে নিজের মেধা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। মুভির অ্যাকশন আর ভিজুয়াল ইফেক্ট হতাশ করেনি একেবারেই। আবার ফ্যামিলি ড্রামা, ইমোশন আর কমেডিতে বারবার টোনাল শিফটিংয়ের কারণে কাহিনী একঘেয়ে হয়নি কখনোই।

পরিচালক ডেভিড স্যান্ডবার্গের সাথে জ্যাকারি লেভাই এবং জ্যাক ডিলান গ্রেজার
© 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

শ্যাজামের থিম সং অবশ্য ম্যান অফ স্টিল কিংবা ওয়ান্ডার ওম্যানের মতো জমজমাট ছিল না। মুভিতে শ্যাজামের সুপারপাওয়ার প্রদর্শনের অ্যাকশন সিকোয়েন্সের বেশিরভাগ সময়েই কমেডিক ভাব ছিল বলে আপাতত সেটার প্রয়োজন বোধ হয়নি খুব একটা। কমিক অ্যাডিক্ট ফ্রেডির মাধ্যমে ডিসির আইকনিক সুপারহিরোদের রেফারেন্স এসেছে অনেকবার। এছাড়াও ‘সুইসাইড স্কোয়াড’ আর উলভেরিনের ইস্টার এগও ছিল। আর মুভির শেষে ক্রেডিটের সময় নোটবুক অ্যানিমেশন স্টাইলে জাস্টিস লিগের অন্যান্য সদস্যদের সাথে শ্যাজামকে উপস্থাপন করার ব্যাপারটা ছিল চেরি অন টপ। হেনরি ক্যাভিলের সুপারম্যান কিংবা দ্য রকের ব্ল্যাক অ্যাডামকে দেখা যায়নি মুভিতে। তবে এক্ষেত্রে লাভই হয়েছে, তখন হয়তো দর্শকের মনোযোগ অন্যদিকে সরে যেত।

মুভির মধ্যে ক্রিস্টমাস ভাইব ছিল পুরোদমেই, হয়তো হলিডে সিজনে রিলিজ দিলেই বেশি মানানসই হত। কিন্তু কাছাকাছি থিমের অন্যান্য ফ্যামিলি মুভির সাথে মিলে যাবে ভেবেই হয়তো ওয়ার্নার ব্রোস কিছুটা ভিন্নধর্মী ‘অ্যাকোয়াম্যান’কে রিলিজ দিয়েছে সেসময়।

বিলির নতুন পরিবার; © 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

ক্ষমতার দিক দিয়ে তুলনা করলে সুপারম্যান বনাম শ্যাজাম লড়াইয়ে কে জিতবে? এ প্রশ্নের জবাব দেয়া আসলেই কঠিন। শ্যাজামের ডাক নাম ছিল ‘ষাটের দশকের সুপারম্যান’, সে মূলত মহাজাগতিক জাদুকরী ক্ষমতার অধিকারী একজন সুপারম্যান। কমিকে শ্যাজামের কোনো দুর্বলতার কথা বলা হয়নি কখনো। এদিকে ক্রিপ্টোনাইটের প্রতি দুর্বলতা থাকার পাশাপাশি সুপারম্যানকে জাদুশক্তির কাছেও কিছুটা অসহায় বলে বিবেচনা করা হয়। তবে একজন ক্রিপ্টোনিয়ানের ওপরে শ্যাজামের জাদুশক্তি কতখানি খাটবে, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। সুপারম্যানের অতিমানবিক ক্ষমতার মাত্রা আসলে কতটুকু, সেটা আসলে হিসেব করে বলা কঠিন, কারণ সে সবসময়েই পৃথিবীর স্বার্থে নিজের ক্ষমতায় বাঁধ দিয়ে রাখে। কমিকে দুজনের মধ্যকার পাঞ্জা লড়াইয়ের ম্যাচ কিন্তু ড্র হয়েছিল। তবে শ্যাজাম তার আইডল মানে সুপারম্যানকে, তাই সুপারম্যান বিপথে না গেলে তাদের মধ্যে লড়াই হবার সম্ভাবনা খুবই কম।

শ্যাজাম বনাম সুপারম্যান; © DC Comics

মাসখানেক আগেই মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সে আসা নতুন সুপারহিরো ক্যাপ্টেন মার্ভেলের সাথেও শ্যাজামের ক্ষমতার তুলনা হয় প্রায়ই। এর পেছনে মূল কারণ হলো তাদের নামের মিল। মার্ভেল কমিকের এই চরিত্র আসার আগে শ্যাজামই ছিল আসল ক্যাপ্টেন মার্ভেল। সাধারণ ক্যাপ্টেন মার্ভেলের চেয়ে শক্তি, সহনশীলতা এবং ক্ষমতার বিচারে বহুগুণে এগিয়ে থাকবে শ্যাজাম। তবে বাইনারি ফর্মে থাকা অবস্থায় তাদের মধ্যে একটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। ক্যাপ্টেন মার্ভেল এনার্জি শোষণ করতে পারলেও জাদুকরী এনার্জি তার কোনো কাজে আসবে না, শ্যাজামের মতো হাইপারস্পিড, সুপার রিফ্লেক্সও তার নেই। আর শ্যাজামের কোনো ক্ষতি হলেও সে জিউসের বজ্রশক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পরেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। স্বয়ং জিউসের মতে, নিজে থেকে না মরলে শ্যাজামকে কখনোই মারা সম্ভব না।

জ্যাকারি লেভাই, অ্যাশার অ্যাঞ্জল এবং জ্যাক ডিলান গ্রেজার; © 2018 Warner Bros. Entertainment Inc.

আবারো মুভির কথায় ফিরে যাই। ৬ এপ্রিল রিলিজের পর এখন পর্যন্ত আইএমডিবিতে এর রেটিং ৭.৮/১০, রোটেন টমাটোজের টমাটোমিটারে ৯২% ফ্রেশ। ‘শ্যাজাম!’ কি অসাধারণ কিছু উপহার দিয়েছে? হয়তো না। কিন্তু প্রতি তিনমাস পরপর সুপারহিরো মুভি উপহার পাওয়া দর্শকদেরকে সাধারণ কিছু কাহিনী দিয়েই দারুণভাবে মাতিয়ে দিয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। খুব দ্রুতই সিক্যুয়েল আসার সম্ভাবনাও বেড়ে গেছে তাই, ইতিমধ্যেই সেটা লেখার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন গেডেন। পরপর দুটি সফল ভিন্ন ঘরানার স্ট্যান্ডঅ্যালোন মুভি উপহার দেয়ার ফলে ডিসির পরবর্তী প্রজেক্ট ওয়ান্ডার ওম্যান ১৯৮৪ কিংবা ফ্ল্যাশ সলো মুভি নিয়ে সবার আশাও বেড়ে গেছে কয়েকগুণে।

কমিকের শ্যাজাম সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য

  • শুরুতে মেরি ছিল বিলি ব্যাটসনের যমজ বোন। তার বাবার ব্যাকস্টোরিও মুভিতে গেছে বদলে। 
  • শ্যাজামের চেহারা তৎকালীন জনপ্রিয় মার্কিন অভিনেতা ক্যারি গ্র্যান্ট এবং ফ্রেড ম্যাকমারের আদলে ডিজাইন করা হয়েছে।
  • এখন সুপারহিরো বলতেই সবাই একনামে ব্যাটম্যান, সুপারম্যান, স্পাইডারম্যানকে চেনে। তবে কমিক বইয়ের স্বর্ণযুগে শ্যাজামের জনপ্রিয়তা ছিল সবচেয়ে বেশি। ১৯৪৪ সালে শ্যাজামের একটি কমিক ইস্যু ১৪ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়।
  • শ্যাজামের আর্চ নেমেসিস হলো ব্ল্যাক অ্যাডাম, সিক্যুয়েলে এ ভূমিকায় অভিনয় করবেন ডোয়াইন জনসন ওরফে দ্য রক। এছাড়া তার আরেক শত্রু মিস্টার মাইন্ডকেও দেখা যাবার আভাস দেয়া হয়েছে মিড ক্রেডিট সিকোয়েন্সে।
  • শ্যাজাম একবার এক দানবকে ঘুষি মেরে ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয়েছিল। তাছাড়া একবার শ্যাজাম বনাম ওয়ান্ডার ওম্যানের লড়াইয়ের ফলে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
  • নিজের ক্ষমতার ফলে নানা ধরনের জাদুমন্ত্র এবং বজ্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সে।
  • একবার তাকে বোকা বানিয়ে তার সমস্ত ক্ষমতা নিয়ে নিয়েছিল কনস্ট্যান্টাইন, পরিণত হয়েছিল নতুন শ্যাজামে।
  • শ্যাজামের ভবিষ্যত দেখার ক্ষমতা আছে।
  • নিজের সাহায্যের জন্য শ্যাজাম চাইলেই যেকোনো দেবতাকে ডেকে আনতে পারে।

Leave a Reply